পৃথিবীর সব থেকে বিরক্ত কর রোগ হলো চুলকানি। এ রোগে সবাই বিরক্ত হয়ে থাকেন। কারণ চুলকানি হলো অস্বস্তি কর। এটা ছোট বড় সবার হয়ে থাকে।
তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক চুলকানি কেনো হয়।
চুলকানি বা এলার্জি কেনো হয়
চুলকানি বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। আপনার যদি এলার্জি জনিত সমস্যা থাকে সে ক্ষেত্রে আপনি যদি চিকিৎসা না নেই তাহলে আপনার চুলকানি সমস্যা বাড়তে পারে।
মানুষের বিভিন্ন ধরণের হয়ে থাকে। অনেকের চোখে ধুলাবালির কারণে এলার্জি হয়ে থাকে। অতিরিক্ত গরমে শরীর ঘামলে এলার্জি হয়। এবং অতিরিক্ত ঠান্ডা তে হয়। এবং দীর্ঘ দিন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকলে এলার্জি জনিত সমস্যা হয়। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি সেটা হলো খাবার খেলে হয়।
প্রত্যেক মানুষেরই একই খাবারে এলার্জি হয় না। কারো কারো, চিংড়ি মাছ, ইলিশ মাছ, গরুর মাংস, পুইশাক, কচু, আইসক্রিম ইত্যাদি খাবারে এলার্জি জনিত সমস্যা হয়ে থাকে। আর আপনি যদি এর চিকিৎসা না করেন তাহলে আপনার চুলকানি হবে।
চুলকানি হবার আরো বেশি কিছু কারণ রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, ডোবা খাল বিলে গোসল করা, ঘরের বেড পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না, নিয়মিত জামা কাপড় পরিষ্কার না করা।
একই কাপড়-চোপড় দীর্ঘদিন ব্যবহার করা। এ সকল কর্মকান্ডের ফলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে চুলকানি দেখা যায়। তার ভিতরে অন্যতম রানের চিপায় চুলকানি ।
চুলকানি দূর করার ওষুধ / রানের চিপায় চুলকানি দূর করার মলম
চুলকানি থেকে মুক্তি পাওয়ার বিভিন্ন ওষুধ রয়েছে। তবে চিকিৎসাকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করায় উত্তম। তারপরও নিচে আপনাদের জন্য চুলকানি দূর করার ওষুধ এর নাম দেয়া হলো :-
আমি যে ওষুধের নামটি আপনাদেরকে জানাবো এটা হল সবার অতি পরিচিত একটি ওষুধ যেটা আপনি যে কোন মুদিখানা দোকান পেতে পারেন।
★ এলাটল (Alatrol tablet 10mg)
স্বাভাবিক ভাবে কারো এলার্জি বা চুলকানিজনিত সমস্যা হলে আপনি এলাটল খেতে পারেন। এই ওষুধ দিয়ে খাবার পরেই আপনার চুলকানি বন্ধ হয়ে যাবে।
★ সিটিরজাইন (cetrizine)
চুলকানি দুর করতে খুবই কার্যকারি একটি ওষুধ। এটা খেলে আপনি চুলকানি থেকে মুক্তি পাবেন।
★ অরডিন (ordain)
এটাও চুলকানি দুর করার ভালো একটি ওষুধ যা আপনি গ্রহন করতে পারেন।
★ ক্যাটরিজিন (cetrizine)
আপনার শরীরের যে কোন চুলকানি হলে আপনি এই ওষুধটি সেবন করতে পারেন। দুই পায়ের মাঝ খানে চুলকানি হলে এটা খেতে পারেন।
★ লরাটাডিন (loratadin)
চুলকানি দূর করার জন্য এটা আপনি যদি নিয়মিত সেবন করে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনি চুলকানি থেকে চিরতরে মুক্তি পেতে পারেন।
★ ডিফেনহাইড্রামাইন ( Diphenhydramine)
যাদের অতিরিক্ত মাত্রায় চুলকানির সমস্যা তাদের জন্য এই বড়িটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
★ ডারমা (Darma 50)
ডারমা এটিও একটি চুলকানির ওষুধ।
উপরে যে সকল ওষুধের উল্লেখ করা হয়েছে সে সকল ওষুধ এলার্জি বা চুলকানির সমস্যা জনিত কারণে সেবন করার জন্য। তবে এ সকল ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
তাহলে চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক প্রাকৃতিক ভাবে ঘরোয়া উপায়ে কিভাবে এলার্জি বা চুলকানি সমস্যা দূর করবেন।
চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায় / raner chipay chulkani
সাধারণত চুলকানি থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদের কিছু নিয়ম কারণ মেনে চলতে হবে। তাহলে আমরা চিরতরে চুলকানি থেকে মুক্তি পেতে পারি। চুলকানি বা এলার্জি থেকে মুক্তি পেতে হলে প্রধান শর্ত হলো :- আমাদের প্রত্যেকেরই খাওয়া দাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কারণ খাবারের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের এলার্জি হয়ে থাকে।
প্রাকৃতিক উপায়ে চুলকানি বা এলার্জি দূর করার উপায় / রানের চিপায় চুলকানি দুর করার উপায়
® চুলকানির দূর করতে হলে প্রাকৃতিক উপায়ে সর্বপ্রথম আপনাকে পরিষ্কার পানি দিয়ে নিয়মিত গোসল করতে হবে। এবং গোসল করার সময় গোসল পানির ভিতরে নিমপাতা দিয়ে হালকা ফুটিয়ে নিতে হবে, এবং পানি ঠান্ডা হলে তারপরে গোসল করতে হবে। আর গোসল করার সময় অবশ্যই আপনাকে সাবান ব্যবহার করতে হবে। তবে গোসল প্রতিদিন নিয়মিত করতে হবে।
® এলোভেরা জেল
চুলকানি দূর করতে এলোভেরা জেলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আমাদের শরীরে অতিরিক্ত চুলকানি হলে, আমরা অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারি। শরীরের যে সকল স্থানে চুলকায় সেখানে আপনি অ্যালোভেরা জেল লাগাতে পারেন, এটা আপনি এক সপ্তাহ ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন।
® লেবু
লেবুর রস শুধু আমাদের শরীরে ভিটামিন সি এবং পেটের সমস্যায় দূর করে না। চুলকানির দূর করতে লেবুর রসের গুরুত্ব রয়েছে অনেক। আমাদের শরীরে স্থানে চুলকানি হয়। লেবুর রসে স্থানীয় মাখিয়ে দিলে চুলকানি আস্তে আস্তে দূর হয়। তবে নিয়মিত ব্যবহার করতে হবে। পায়ের চিপায় চুলকানি দুর হবে।
® নিম পাতা
শরীরে যে কোন অংশে চুলকানি হলে, অবশ্যই আপনি নিমপাতা বেটে শরীরে মাখতে পারেন। এর ফলে আপনার শরীরের ত্বক সুন্দর হবে এবং চুলকানি দূর হবে। রানের চিপায় কালো দাগ এবং চুলকানি দুর হবে।
এছাড়া আপনি চুলকানি দূর করতে বিভিন্ন ধরনের ক্রিম বা মলম ব্যবহার করতে পারেন।
চুলকানি দূর করার ক্রিম
চুলকানি হলে যে সকল কিংবা মলম ব্যবহার করা উচিত। অবশ্য সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। রানের চিপায় চুলকানি দূর করার ক্রিম তাহলে চলুন চুলকানি দুর করার জন্য সে সকল ক্রিম ব্যবহার করবেন তা সম্পর্কে জেনে নিন।
© পেভিসন ক্রিম (pavison cream)
আপনার শরীরের যেকোন চুলকানির জন্য আপনি পেভিসন ক্রিমটি ব্যবহার করতে পারেন। আমাদের শরীরে অনেক ক্ষেতে দুই পায়ের মাঝখানে চিপায় চুলকানি হয়ে থাকে, এক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করতে পারেন।
© ডার্মাসল এন ক্রিম ( Darmasol N cream)
এই মলম সম্পর্কে অনেকে জেনে থাকবেন। কারণ বেশিরভাগ চুলকানি ক্ষেত্রে এই মলমটি বেশিরভাগ মানুষ ব্যবহার করে থাকেন। চুলকানি থেকে মুক্তি পাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ডার্মাসল এন ক্রিম। দুই রানের চিপায় চুলকানি দুর হবে।
© হাইড্রোকর্টিসন ক্রিম ( Hydrocortisone cream)
এটা চুলকানির সময় যে কোন ব্যবহার করতে পারেন। এটা ব্যবহার করার ফলে আপনি নিশ্চিত চুলকানি থেকে মুক্তি পাবেন।
উপরের এ সকল ক্রিম ব্যবহার করলে আপনি চুলকানি থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
একটি কথা আপনাদেরকে জানিয়ে রাখি। আমাদের শরীরে যখন চুলকানি বা এলার্জিজনিত সমস্যা হয়ে থাকে, তখন আমরা হাত দিয়ে শরীরে বিভিন্ন জায়গা চুলকাতে থাকি।এর ফলে আমাদের চুলকানি আরো বৃদ্ধি পায়। তবে আপনার শরীরে এমন সমস্যা হলে আপনি কখনোই চুলকাবেন না। কারণ হাতের নখ দিয়ে চুলকানোর ফলে আপনার শরীরের ত্বকের চামড়া উঠে যায় এবং এর ফলে ত্বকের ক্ষতি হয় এবং আপনার নখের কুনির বিষ লেগে আরো চুলকানি বৃদ্ধি পায়।
আমাদের শেষ কথা :- উপরের পোস্টটি পড়ে নিচে বুঝতে পেরেছেন চুলকানি বা এলার্জির জনিত সমস্যা থেকে কিভাবে মুক্তি পেতে পারি। সম্পর্কে যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে অবশ্য আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন আশা করি আপনার সঠিক উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।